বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

চকরিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার ভাতার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সোয়েব সাঈদ : প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে চকরিয়ার বাসিন্দা শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন চকরিয়া উপজেলার বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সিকদার পাড়ার শহীদ আকবর আহমদ ও রশওন আরা বেগমের ছেলে। তার বড় ভাই বদিউল আলম বাবুল এ প্রতারণার শিকার হন। শাহাব উদ্দিন সম্পর্কে বদিউল আলম বাবুলের সৎ ভাই। এ ঘটনায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রতারণার শিকার বদিউল আলম।

জানা গেছে- শহীদ আকবর আহমদের দুই স্ত্রী। এরা হলেন ১ম স্ত্রী মুহছেন আরা বেগম ও ২য় স্ত্রী রশওন আরা বেগম। ১ম স্ত্রী মুহছেন আরা বেগম মারা যাওয়ার পর রশওন আরা বেগমকে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলে ও দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে। দুই পরিবারের মধ্যে বদিউল আলম সবার বড়।

জানা যায়, বদিউল আলমের সৎ ভাই শাহাব উদ্দিনের কাছে মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত কাগজপত্র সবই ছিল। বদিউল আলম ভাতা সম্পর্কে মাঝে-মধ্যে সৎ ভাই শাহাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ভাতা সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য দিতেন না। গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু হলেও শাহাব উদ্দিন বিষয়টি গোপন রেখে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, রেশন ভাতা, উৎসব ভাতা উত্তোলন করছেন। এমন তথ্য জানতে পেরে বিষয়টি সম্পর্কে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন বড় ভাই বদিউল আলম বাবুল।

প্রতারণার শিকার বদিউল আলম বাবুল জানান, সৎ ভাই শাহাব উদ্দিন আমাদের তিন ভাইয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাদের ভাতার অংশ একাই ভোগ করছে। সম্প্রতি ভাতা প্রসঙ্গে শাহাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে সে উল্টো জবাব দেন- বাবার নাম গেজেটভুক্ত করার জন্য ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। তাই সে আমাদের কোন ভাতার টাকা দিবে না।

এত টাকা কেন খরচ হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে আমাকে বলে, এলাকার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে গিয়ে বাবার নাম গেজেটভুক্ত করার জন্য টাকা খরচ হয়েছে। তাই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে টাকা দিতে হয়েছে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টেও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তিকে টাকা দিতে হয়েছে। তাই সবমিলিয়ে ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরো জানান, সে আমাকে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা দিয়ে হুমকি দেয়, আমি যাতে আর এলাকায় যেতে না পারি এবং তার সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করে। এ ব্যাপারে আমি জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছি। সে রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করেছ। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন বলেন, উপজেলা-জেলা ছাড়াও ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও জামুকা কার্যালয়ে গিয়ে অনেক চেষ্টা তদবির করে আমার পিতাকে গেজেটভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছি। এজন্য আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা ভাতা বরাদ্দ কমিটি আইন অনুযায়ী যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই আমি মেনে নিব।

চকরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু মোহাম্মদ হাজী বশিরুল আলম বলেন, চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আকবর আহামদ একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি সরকার প্রণীত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত হন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আহামদ। যা পরবর্তীতে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্তির জন্য টাকা নেয়া প্রসঙ্গে উপজেলা কমান্ডার আবু মোহাম্মদ হাজী বশিরুল আলম বলেন, বিষয়টি সঠিক নয়। তবে পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অর্ন্তভূক্তির জন্য সন্তান সাহাব উদ্দিনের কিছু টাকা খরচ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আমার কাছে ফোন করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে আমার বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি।

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু মোহাম্মদ হাজী বশিরুল আলম আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা নিয়ে দ্বন্দের সৃষ্টি হলে তা মিমাংসার জন্য উপজেলা পর্যায়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট ভাতা বরাদ্দ কমিটি রয়েছে। শহীদ পরিবারের মাঝে ভাতার টাকা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের ব্যাপারে উপজেলা ভাতা বরাদ্দ কমিটির কাছে লিখিত আবেদন করলে তা মিমাংসার উদ্যোগ নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888